অভাব আর সংগ্রামের সঙ্গে যার ছোটবেলা, স্বপ্ন দেখাটাই যেন তার কাছে বিলাসিতা। ঠিক এমনই এক মেধাবী শিক্ষার্থীর নাম মরিয়ম। সে হাসিমুখের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। অস্বচ্ছল পরিবার থেকে উঠে আসা এই মেধাবী মেয়েটি ২০২১ সালে জীবিকার তাগিদে গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় আসে। কিন্তু ঢাকার কষ্টসাধ্য জীবন তার জন্য হয়ে ওঠে আরও দুর্বিষহ। ঠিক এমন এক দুঃসময়েই, হতাশার অন্ধকারে ডুবে থাকা মরিয়মের জীবনে আশার আলো হয়ে আসে হাসিমুখ । মরিয়মের গল্প শুনে হাসিমুখ তাকে আশ্বাস দেয় যে এখন থেকে হাসিমুখই হবে তার পরিবার।
২০২২ সাল থেকে শুরু হয় হাসিমুখের সঙ্গে মরিয়মের পথচলা যা ছিল তার জীবনের এক যুগান্তকারী মোড়। মরিয়মের কাজ করার অদম্য ইচ্ছা এবং ভেতর লুকিয়ে থাকা অসাধারণ প্রতিভা হাসিমুখকে মুগ্ধ করে। সে তার নিপুণ হাতের কাজ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সুন্দর শিল্পকর্ম তৈরি করে সকলকে বিমোহিত করে। হাতের কাজের প্রতি ভালোবাসা ও অসাধারণ দক্ষতায় সে তৈরি করে ব্লক ডিজাইন, প্যাচ ডিজাইন, এমনকি ওয়েস্ট ম্যাটেরিয়াল দিয়ে নান্দনিক হস্তশিল্প। তাকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য হাসিমুখ একজন দক্ষ ট্রেইনারের অধীনে তার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। দক্ষ প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে মরিয়ম হয়ে ওঠে স্বনির্ভর। আজ এমন কোনো হস্তশিল্প নেই, যা মরিয়ম তার নিজের হাতে তৈরি করতে পারে না!
একসময়ের অসহায় ছোট্ট মরিয়ম আজ অনেক বড় হয়েছে এবং সামনে সে এসএসসি পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে। হাসিমুখের এই প্রচেষ্টা মরিয়মকে সম্পূর্ণভাবে স্বনির্ভর করে গড়ে তুলেছে। পড়াশোনার পাশাপাশি সে হস্তশিল্পে দক্ষ হয়ে উঠছে, এরই সাথে সে নিজে আয় করছে এবং অন্যান্য সুবিধাবঞ্চিত শিশুদেরও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। আজ মরিয়ম তার পরিবারের অন্যতম প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। হাসিমুখের এই মহৎ উদ্যোগ সবসময়ই সমাজের পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করে, যাতে তারা স্বাবলম্বী হয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে এবং তাদের পরিবারের দায়িত্ব নিতে পারে। মরিয়মের এই যাত্রা প্রমাণ করে হাসিমুখ সবসময় সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে তাদের দক্ষতা উন্নয়ন, আত্মনির্ভরশীলতা ও স্বপ্নপূরণে কাজ করে যাচ্ছে।


